বন্ধু থেকে ভালোবাসা
কান্নায় ফেটে পরা চোখে বুকে কষ্ট নিয়ে আমি, "অনিক" এর দেওয়া লেটার টা হাতে নিয়ে "দেবপ্রিয়আ" কে দিলাম।আমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছি সে লেটার টা খুলে দেখলো সেটা শান্তনুর দাওয়া লাভ লেটার।"দেবো প্রিয়া" খুব খুশি মনে ফিলিং নিয়ে লেটার টা পরলো ।আমি কাদতে কাদতে ,সেখান থেকে "অনিক" এর কাছে চোখের জল মুছে গেলাম আর বললাম যে তোর কাজ হয়ে গেছে।'অনিক" খুব খুশী হইয়ে দেবো প্রিয়ার কাছে গেলো ,দুজনের মধ্যে কথোপকথন হলো একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো।
অনিক প্রপোজ করল দেবু "আই লাভ ইউ" দেবু ও লাভ ইউ টু .....অনিক ,...বলল।আমি কলেজের ক্যান্টিন থেকে বাগানের মধ্যে তাদের ভালোবাসার রাসলীলা দেখছিলাম।.............."আমি" আর "অনিক" বেস্ট ফ্রেন্ড একে অপরকে সব শেয়ার করি ।অনিক আমার ছোটবেলা কার বন্ধু। কি করে ওর হাসি খুশী কে মাটিতে মিশিয়ে দেবো "অনিক" হ্যাপী তো আমিও হ্যাপি।ওখানে না থাকতে পেরে আমি দৌড়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে পরলাম ,সোজা বাস্টান্ড এ গিয়ে বাস ধরলাম। কখনও ভাবিনি, যে যাকে আমি তুই তুই করি, যার সঙ্গে দিন রাত ঝগড়া করেছি,মারপিট করেছি ,তাকে একদিন ভালোবেসে ফেলবো, আর এটাও ভাবিনি যে আমি তাকে অন্য কারো হতে দেখবো।
........... বাড়ি পৌঁছলাম,এসে নিজের রুমে দরজা লাগিয়ে "অনিক" এর সঙ্গে জড়ানো স্মৃতি গুলি তাজা করলাম।ওর সঙ্গে কাটানো দুষ্টু মিষ্টি দিন গুলি, ওর সঙ্গে সব জাইগা ঘুরে বেড়ানো ........।..........এদিকে মা ফোন করেছে আমি খেয়েছি কিনা ? কলেজ থেকে ফিরেছি কিনা? কারণ মা আমার নানি মা কে দেখতে গেছিলেন।আমি বললাম হ্যা মা খেয়েচি।এই বলে ফোন টা কেটে কাদতে শুরু করলাম। হটাৎ "অনিক" এর কল আসলো,আমি অনিক এর কল এর অপেক্ষায় ছিলাম কেননা রোজ "অনিক ,আমি" অনেক রাত পর্যন্ত মজা করি,কলেজের দেওয়া কাজ, কথা বলতে বলতে করি।অনিক বললো "মেরি" তুই আজকে না বলে কেনো চলে এসছিলি ???আমি চুপ করে শুনছি অনিক বার বার হ্যাল্লো হ্যাল্লো করছে কিন্তু আমি কথা বলার সাহস পাইনা, কারণ অনিক আমার কান্নার আওয়াজ শুনলে নিজেও কেদে ফেলবে আর রাতা রাতি আমার বাড়ি আসবে।আমি চুপ করে রইলাম। কল টা কেটে আমি "অনিক" কে ম্যাসেজ দিলাম যে "অনিক" আমি তোর উপর রেগে আছি,"অনিক" বলে উঠলো কেনো রে কি হয়ছে???মেরি প্লিজ সত্যি বলনা কি হয়েছে??আমি বললাম যে তুই আজ এত হ্যাপি দেবু কে পেয়ে তবুও পার্টি দিলিনা??অনিক বলল, মেরি ,কাল কে আমি, তুই আর দেবু, তিন জনে মিলে পার্ক এ যাবো ওকে।আমি সেন্সলেস হয়ে গেলাম এই কথা শুনে।মনে হচ্ছে কেউ যেনো আমাকে হাতুরি মেরে তির দিচ্ছে বুকে।আমি মেসেজ করলম ওক ডান! অনিক , ঘুমিয়ে পড় অনেক রাত হয়েছে।
........পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি অনেক এর ৩০মিসকল ,আমি ব্রাশ করে স্নান সেরে তৈরি হলাম।দরজা খুলতেই দেখি অনিক আমার জন্যে দাড়িয়ে।অনিক কে কাছে পেতে এক মুহূর্তের জন্যে মনে হলো অনিক কে নিয়ে অনেক দূরে চলে যাই যেখানে শুধু অনিক আর আমি,আর কেউ না।.........অনিক আর আমি বাস ধরলাম,বাস এ কিছু ছেলে আমার দিকে খারাপ নজরে তাকাচ্ছিলো।অনিক এসব দেখে বাস থেকে নামতে বললো ,আমি বললাম কেনো???অনিক বলল আজকে আমরা কলেজ তো যাবনা তাই চলনা আজ হেঁটে যাই ,,আমি খুব খুশি হলাম এই কথা শুনে।অনিক বললো একটু হেটে গেলেই দেবু কে ওখান থেকে নিয়ে পরের বাস এ পার্ক এ যাবো। অবশেষে দেবুর কাছে পৌঁছলাম বাস এ অনিক আমাকে বসার শিট করে দিল।অনিক আর দেবু দাড়িয়ে রইল হতে হাত ধরে।আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না।চোখ ঘুরিয়ে নিলাম।পার্ক এ নামলাম।পার্ক এ দেবু র অনিক একে অপরের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ট ভাবে ঘুরছিল ,নিজেকে খুব একা লাগলো........….....
মনে হলো একদিন এই পার্ক এ অনিক আর আমি কতদিন এসছি সেই দিন শুধু অনিক আর আমি ছিলাম কতইনা মজা করেছিলাম আমরা।তারা দুজনে একে অপরকে এটা ওটা দেখাতে ব্যাস্ত।আমি একা বসে রইলাম।অনিক প্রথম প্রেমে পড়েছে প্রথম প্রেমের অনুভব ই আলাদা। হঠাৎ অনিক এর কলেজ থেকে কল এলো যে,কলেজ এ আজ মিটিং আছে।প্রত্যেক কেই উপস্থিত থাকতে হবে। তৎক্ষণাৎ আমরা তিন জনে ওখান থেকে কলেজ e পৌঁছলাম।মিটিং শেষ এ অনিক আমি আর দেবু বাগানে বসলাম।দেবু অনিক এর আর নিজের ছবি উঠাচ্ছিল।তার পর অনিক চলে গেলো ।আমি আর জল আটকে রাখতে পারলাম না।দেবু আমার কাঁদা দেখে কি হয়েছে মেরি বলে উঠলো??আমি বললাম কই দেবু আই অ্যাম ওকে।সঙ্গে সঙ্গে আমি বাড়ির পথে চলে এলাম ।দেবুর আমার প্রতি সন্দেহ হোয়েছিল। বাড়ি এসে নিজের কষ্ট ডাইরি তে লিখতে লাগলাম প্রতিটা মুহূর্তের কথা কষ্টের কথা লিখতে শুরু করলাম।এই ভাবে ৫দিন কেটে গেলো।আমি কদিন ধরে কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি,অসুস্থতার নামে ।নইলে অনিক কে কিছুই লুকানো অসম্ভব,কারণ আমি অনিক আর দেবো প্রিয়া কে একসঙ্গে দেখতে পারিনা খুব কষ্টের মধ্যে থাকতে হয়।পরদিন কলেজ গেলাম প্রাকটিস ক্লাস এর জন্যে।ভেবে ছিলাম অনিক কে কিছুই জানা বনা কলেজ এসছি এটা,কিন্তু বাকি ফ্রেন্ড রা অনিক কে বলে দিয়েছে।তাই আমি ভেবে ছিলাম অনিক কে বলব আমার ফোনে টা খারাপ তাই জানতে পারিনি।অনিক এলো আমি তাই বললাম।অনিক এর সঙ্গে দেবু ও এলো।দেবু আমায় জিজ্ঞাসা করলো কেমন আছে তোমার শরীর?? তুমি ঠিক আছো তো??আমি বললাম হ্যাঁ।অনিক বললো মেরি চল টিফিন খেয়ে নিই,আমি বললাম অনিক,আজকে আমার খিদা নেই ,তুই আর দেবু খেয়ে নে,এই বলে আমি চলে গেলাম সেখান থেকে।আমি ক্লাস এ বসে আছি তখন কেউ ছিলনা আমি একা, ………………
ডাইরি বের করে আবার লিখতে লাগলাম। হঠাৎ ক্লাস এ সবাই টিফিন শেষ এ চলে আসলো ,দেখি দেবু আর অনিক ও এসে গেছে।দেবু আমার কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি ডাইরি টা ব্যাগ এ ভরে দিলাম।কলেজ এর অফিস এ আমায় প্রিন্সিপাল এর ডাক এলো।আমি অনিক কে বললাম আমি অফিস থেকে আসছি অনিক বললো চল আমিও যাই তোর সঙ্গে।আমি বললাম,না তোকে আসতে হবে না তুই দেবুর কাছে থাক।দেবু বলে উঠলো ,অনিক যাক মেরি,দুজনেই আসো।এদিকে আমরা প্রিন্সিপাল এর অফিস এ গেলাম।দেবুর আমার ডাইরি তে নজর পরে ছিল, আমি এই কারণেই ভয়ে অনিক কে আসতে নিষেধ করেছিলাম। যত তারা তারি সম্ভব কাজ সেরে আমি ক্লাস রুম এ এলাম,ব্যাগ খুলে দেখলাম ডাইরি আছে না নেই।তখন দেবু সেখানে ছিল না,এটা দেখে মন টা শান্তি পেলো।ক্লাস শেষ এ আমি অনিক দেবু কে খুঁজছি, দেবু ক্লাস করেনি, কোথায় দেবু,??অবশেষে দেবু অনিক বলে ডাকলো,দেবু বললো যে আজ আমার ক্লাস এ মন ছিলনা ,তোমাদের আসতে লেট হলো তাই বলে আসা হইনি।এর পর আমরা বাড়ি ফিরলাম।পরের দিন দেবুর জন্ম দিন,তাই অনিক আমাকে একটা সারপ্রাইজ প্ল্যান করতে বললো। কি কি করবে দেবুর জন্ম দিনে ওকে কি উপহার দেওয়া যায় সারারাত আমার সঙ্গে ডিসকাস করলো।আমি মনে কষ্ট আটকে তাকে ভালো কিছু সারপ্রাইজ ,গিফট সাজেস্ট করলাম।
পরদিন সকাল বেলা নিজেকে আর থামাতে পরলাম না।অনিক এর দেওয়া সমস্ত কিছু কে ছুড়ে ফেললাম,ব্যাগ থেকে ডাইরি বের করে দেখি যে ডিয়ারির কিছু পেজ নেই।আমি চমকে গেলাম।এসব কি বাকি পেজ কোথায় গেলো???এই চিন্তা করছি পুরো রুম সার্চ করলাম,কিন্তু পেলাম না।আমি ডাইরি টার সমস্ত পেজ ছিড়ে ছুড়ে দিলাম। হঠাৎ পিছন ঘুরে দেখি অনিক আমার পেছনে অঝর নয়নে কাঁদছে!অনিক এর হাতে কিছু ছেরা পৃষ্ঠা,অনিক এর কাছে গিয়ে দেখলাম সেটা ছিল আমার ডাইরির পৃষ্ঠা!আমি ছুড়ে ফেলা পৃষ্ঠা গুলোকে কুড়িয়ে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে রুম থেকে বেরোবো,দেখি সামনে দেবু!আমি থমকে দাঁড়ালাম,অনিক আমার কাছে এসে বলে উঠলো ,মেরি ........ আমি ঘুরতেই আলতো ভাবে একটা চর মারলো.....আমি গাল এ হাত দিতেই অনিক আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমি তখন জ্ঞান হারা অবস্থায় রইলাম।ঠিক কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ………………
দেবো প্রিয়া আমাদের কাছে এসে বললো, মেরি আমি তো প্রথম দিনই সন্দেহ করেছিলাম যে তোমার মনে অনিক এর জন্য কিছু ফিলিংস আছে,তবে কনফার্ম ছিলাম না।কল কলেজ এ তোমার ডাইরি পরে সব বুঝলাম। আর এটাও বুঝলাম যে ভালোবাসার মানুষটিকে খুশি দেখতে পেয়ে নিজে কষ্টের জীবন কিভাবে কাটিয়ে তিল তিল করে ব্যাচা যাই।তুমি অনিক এর খুশির জন্যে চুপ চাপ সহ্য করে গেছে।....…........তাই আমি ভাবলাম তোমাদের বন্ধুত্ব তাকে একটা ভালো রিলেশন এ বেঁধে দিলে সব থেকে বেশি ভালো হয়।কেননা অনিক মেরির কষ্ট দেখতে পারবেনা।অনিক আমি যখনই টাইম এসপেন্ড করতাম অনিক মেরির গল্পই করত,আমি তো আমার সঙ্গে অনিক এর নাম যোগ করার চেষ্টা করতাম আর অনিক তো মেরি আর অনিক এর নাম নিয়েই থাকতো।....….......দেবো প্রিয়া বলল যে,মেরি তোমার ডাইরি টা পরে আমি ,সঙ্গে সঙ্গে ওখান থেকে চলে গেছিলাম।তার পর তোমাকে কিছুই বুঝতে দেইনি,।রাত্রি বেলা আমি অনিক কে সব কিছু বলে ছিলাম।আর আজ সকালে আমি আর অনিক দুজনে তোমার কাছে এসছি।.…..….…....….…………ভালোবাসা তো তোমাদের মতই হওয়া জরুরি যে একে অপরের এত কেয়ার করবে,পরোয়া করবে,।.....…....এই বলে দেবু চলে গেলো।অনিক আর আমি দুজনে এক মিষ্টি দুষ্টু সম্পর্কে বেঁধে পরলাম।…………..……………………যার নাম বন্ধুত্ব ভালোবাসার এক পূর্ণ রূপ।
Edited by:
Salma yeasmin
আমার এই বন্ধুত্বের প্রেম গল্পো টা কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানা বেন আর অপরকে জানানোর সুযোগ করে দেবেন সেয়ার করে।
Pls follow me on YouTube channel#Salmayeasmin
And always subscribe my channel
Like share r comments korte vulben na
No comments:
Post a Comment